বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল ২০২৪
প্রথম পাতা » জেলার খবর | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বান্দরবানে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার উদ্ধার
বান্দরবানে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার উদ্ধার
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিনিধি: বান্দরবানের রুমা উপজেলায় পাহাড়ের অরণ্য থেকে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় র্যাব, ডিজিএফআই এবং সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে রুমার বেতেলপাড়া থেকে সুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) দিদারুল আলম জানান, অপহরণের ৩ দিনের মাথায় রুমা উপজেলার বেতেলপাড়া থেকে যৌথবাহিনী অপহৃত ম্যানেজারকে উদ্ধার করেছে। অপহৃত ম্যানেজার সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। তিনি বর্তমানে রুমা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে রয়েছেন।
এদিকে রুমা ও থানচি উপজেলায় ব্যাংক লুট ও অপহরণের পর কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের সঙ্গে সব ধরনের সংলাপ ও যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। সেই সঙ্গে এ ঘটনার জন্য নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কমিটির সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কেএনএফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে আলোচনা এবং তাদের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন।
এ সময় সাংবাদিকদের সামনে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২ এপ্রিল রুমা উপজেলায় কেএনএফ কর্তৃক পবিত্র রমজান মাসে তারাবি নামাজিদের ওপর হামলা, সরকারি কর্মকর্তা ও পথচারীদের জিম্মি, অর্থ লুটের উদ্দেশ্যে সোনালী ব্যাংকে হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া। ৩ এপ্রিল থানচি উপজেলায় স্থানীয়দের জিম্মি করে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ ও দুটি ব্যাংক লুট করার মতো হীন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এদিকে বান্দরবান সদর শাখা, আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ব্যাংকের সব কার্যক্রম চালু থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি উপজেলায় সব ধরনের ব্যাংক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সোনালী ব্যাংকের এজিএম ওসমান গনি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাত ৯টায় রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংক লুট করার চেষ্টা করে এবং পরে লুট করতে না পেরে ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। পরে বুধবার বিকেল ৩টার দিকে এই শাখার ভোল্ট থেকে কক্সবাজার থেকে সিআইডি এসে অক্ষত অবস্থায় ১ কোটি ৫৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা বের করে।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে আবার থানচি উপজেলায় অবস্থিত সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে প্রবেশ করে কেএনএফ। এ সময় তারা (কেএনএফ) দুই ব্যাংকের ক্যাশ থেকে মোট ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুট করে পালিয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংক শাখায় লুট করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ সময় পুলিশের ৮টি চায়না রাইফেল, ২টি এসএমজিসহ ১০টি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি, আনসার সদস্যদের ৪টা শটগান ৩৫ রাউন্ড গুলিসহ ১৪টি অস্ত্র লুট করেছে সন্ত্রাসীরা। তবে ব্যাংকের চাবি না পাওয়ায় ভল্টের ভেতরে থাকা ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লুট করতে পারেনি লুটেরারা। এদিকে মসজিদ থেকে বেরুনোর পর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ভল্টের চাবি না দেওয়ায় ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।