মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | ইউরোপ | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ইউরোপ ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত: মাক্রোঁ
ইউরোপ ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত: মাক্রোঁ
বিবিসি২৪নিউজ,ইইউ প্রতিনিধি: সোমবার ইউক্রেন সংক্রান্ত সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার পরাজয় নিশ্চিত করতে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন৷ ইউক্রেন অবশ্য প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পশ্চিমা সহায়তার অভাব সম্পর্কে অভিযোগ করছে৷
রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ইউরোপের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহায়তার সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিতে প্রস্তুত নন৷ এমনকি প্রয়োজনে সেনাবাহিনী পাঠানোর কথাও বলেছেন তিনি৷ সোমবার প্যারিসে ইউক্রেন সংক্রান্ত ইউরোপীয় সম্মেলনে উপস্থিত ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর মাক্রোঁ গেশের অভ্যন্তরে ও যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার আরো কড়া অবস্থানের উল্লেখ করেন৷ তাঁর মতে, এমন অবস্থায় ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে রাশিয়ার পরাজয় অপরিহার্য৷ শুধু ইউক্রেন নীতির কারণে নয়, সার্বিকভাবে রাশিয়ার আগ্রাসী মনোভাব বেড়ে চলেছে বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মন্তব্য করেন৷
রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করতে ইউক্রেনের সহায়তা সম্পর্কে ইউরোপে নীতিগত ঐকমত্য থাকলেও খুঁটিনাটী বিষয়গুলির প্রশ্নে মতমাপার্থক্য রয়েছে৷ যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরেই জার্মানি সে দেশকে সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা দিলেও সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে নারাজ৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সম্প্রতি ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে নিজের দ্বিধার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন৷ জার্মান অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালালে জার্মানিও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন৷
মাক্রোঁ স্বীকার করেন, যে ইউরোপীয় সেনাবাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে এখনো কোনো ঐকমত্য নেই৷ তবে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’-র স্বার্থে তিনি কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিতে প্রস্তুত নন৷ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো মনে করিয়ে দেন, যে দুই বছর আগে রাশিয়ার হামলার শুরু হওয়ার পরেও অনেকে ইউক্রেনকে ট্যাংক বা যুদ্ধবিমান দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন৷ তাঁর মতে, বিনয়ের সঙ্গে স্বীকার করা উচিত যে অবশেষে ছয় থেকে বারো মাস দেরিতে সেই সহায়তা পাঠানো হয়েছে৷
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ প্যারিস সম্মেলনের পর বলেন, আপাতত ইউক্রেনের কমে আসা গোলাবারুদ ও অস্ত্রসশস্ত্রের প্রেক্ষাপটে অবিলম্বে আরো সামরিক সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ আরো বেশি ও আরো দ্রুত মাঝারি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা সরবরাহ করে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে চায় ইউরোপ৷ এমনকি ইউরোপের বাইরে থেকেও গোলাবারুদ কিনতে ইউক্রেনকে সাহায্য করার পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে৷
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে প্যারিস সম্মেলনে যোগ দেন৷ সংক্ষিপ্ত বার্তায় তিনি সমবেতভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান৷ তাঁর মতে, পুটিনকে কিছুতেই ‘আমাদের সাফল্য’ ধ্বংস ও অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধেও আগ্রাসন চালাতে দেওয়া হবে না৷ তবে সেই সংগ্রামে পশ্চিমা সহায়তা সম্পর্কে ইউক্রেনে কিছুটা হতাশা দেখা যাচ্ছে৷ সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ রোববার বলেন, যে পশ্চিমা সামরিক অঙ্গীকারের প্রায় অর্ধেক অনেক দেরিতে এসে পৌঁছাচ্ছে৷ জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, ইইউ যে দশ লাখ গোলাবারুদ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার মাত্র ৩০ শতাংশ ইউক্রেন হাতে পেয়েছে৷ মার্কিন সংসদে বিশাল সামরিক সাহায্যের প্রস্তাব আটকে থাকায়ও যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেন কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে৷