রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » জি২০ সম্মেলনের সমাপ্তি, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ব্রাজিল
জি২০ সম্মেলনের সমাপ্তি, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ব্রাজিল
বিবিসি২৪নিউজ,অমিত ঘোষ দিল্লি থেকে: জি-২০ জোটের ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক পৃথিবী এক পরিবার স্লোগানে প্রতিষ্ঠিত জোটের পরবর্তী প্রেসিডেন্সি লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি।
জি২০ জোটের আনুষ্ঠানিক প্রেসিডেন্সি পেয়েছে ব্রাজিল। নরেন্দ্র মোদি আজ রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার হাতে প্রেসিডেন্সি ব্যাটন তুলে দিয়েছেন। আগামী এক বছরের জন্য উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর নেতৃত্ব দিবেন তিনি। পাশাপাশি ভারতের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।
আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ব্রাজিলের আনুষ্ঠানিক মেয়াদ শুরু হবে। জোটের ১৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে রিও ডি জেনেরোতে।
সমাপনী বক্তব্যে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘গতকাল, আমরা এক পৃথিবী, এক পরিবার অধিবেশনে বিস্তৃত আলোচনা করেছি। আমি সন্তুষ্ট যে আজ জি২০ এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যত সম্পর্কে আশাবাদী প্রচেষ্টার একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।
লুলা দা সিলভা মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই, শক্তির পরিবর্তন এবং টেকসই উন্নয়নকে জি২০’র অগ্রাধিকার হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক শক্তি ফিরে পেতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী, অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নতুন উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রয়োজন। আমরা বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ-এ উদীয়মান দেশগুলোর জন্য বৃহত্তর প্রতিনিধিত্ব চাই।
শীর্ষ সম্মেলনের বড় অংশ ছিল ‘বিশ্বব্যাপী আস্থার ঘাটতি’, গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্সের সূচনা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, সৌদি আরব এবং উপসাগরীয় রাজ্যগুলির মধ্যে নতুন সংযোগ নেটওয়ার্ক চালু করার আহ্বান।
জি২০ সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে দিল্লি ঘোষণাপত্র গ্রহণ করেছে, যা শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন সমুন্নত রাখার জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘আমরা সমস্ত রাষ্ট্রকে আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষাকারী বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাসহ আন্তর্জাতিক আইনের নীতিগুলোকে সমুন্নত রাখার জন্য আহ্বান জানাই।’
চীন এবং রাশিয়া, যাদের রাষ্ট্রপ্রধানরা শীর্ষ সম্মেলন এড়িয়ে গেছেন, তারাও দিল্লি ঘোষণার সঙ্গে একমত ছিল। কিন্তু যখন ঘোষণায় সকল রাষ্ট্রকে বলপ্রয়োগ করে ভূখণ্ড না দখলের আহ্বান জানানো হলেও ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার নিন্দা করা হয়নি।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, জি২০’র সম্মিলিত এই ঘোষণায় গর্ব করার মতো কিছুই নেই। তারা ইউক্রেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও ভালভাবে বুঝতে পারত।
ব্লকটি আরও বলেছে, তারা ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষমতা তিনগুণ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে এবং জাতীয় পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কয়লা শক্তি হ্রাস করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করবে তবে তেল এবং গ্যাসসহ সমস্ত দূষণকারী জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
বিশ্বের জিডিপির ৮৫ শতাংশই আসে জি২০ জোটভুক্ত দেশগুলো থেকে। পাশাপাশি ৮০ শতাংশ নির্গমন আসে এই দেশগুলো থেকেই। তারা জীবাশ্ম জ্বালানি ভর্তুকি নির্মূল এবং যুক্তিযুক্ত করার জন্য পিটসবার্গে করা ২০০৯ সালের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখবে বলে জানিয়েছে।
এবারের সম্মেলনে আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি২০-এর নতুন স্থায়ী সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রোববারের অধিবেশনের আগে, প্রতিনিধিরা দিল্লিতে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধ রাজঘাটে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।